Islamic History, Uncategorized

ওসমানি খিলাফত

ওসমানী খিলাফাহর সময়ে যখন কোন সুলতানের কাছে রাজপ্রাসাদের অন্দরমহল থেকে এই সংবাদ আসত যে, তার অর্ধাঙ্গিনী- সম্রাজ্ঞীর প্রসব বেদনা আরম্ভ হয়ে গেছে, তখন সুলতান কুরআন তেলাওয়াত শুরু করে দিতেন। সুলতান কুরআন তেলাওয়াত করতেন আর অত্যন্ত উদ্বেগ আর উতকন্ঠার সাথে অপেক্ষা করে চলতেন ভেতর থেকে কখন খবর আসবে যে, ওসমানী খিলাফাহর রাজপ্রাসাদকে আলোকিত করে তার কোল জুড়ে একটি ফুটফুটে সন্তানের শুভাগমন ঘটেছে এই ধরাতে!
একবার সুলতান দ্বিতীয় মুরাদের কাছে অন্দরমহল থেকে সংবাদ আসল যে, ভেতরে সম্রাজ্ঞীর প্রসব বেদনা আরম্ভ হয়ে গেছে। সংবাদটি শুনতেই সুলতান কুরআন তেলাওয়াতে বসে গেলেন। তিনি যখন সুরা মুহাম্মদ শেষ করে সুরা আল-ফাতহ শুরু করেছেন, ঠিক তখনই ভেতর থেকে খবর আসল যে, তার একটি পুত্রসন্তান দুনিয়াতে আগমন করেছে। সাথে সাথে সুলতান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলেন। পুত্রের নাম রাখলেন ‘মুহাম্মদ’, আর বললেন, ইনশাআল্লাহ সে অনেক অঞ্চল বিজয় করে খিলাফাহর আয়তনকে আরও বর্ধিত করবে। 

হ্যাঁ, এই মুহাম্মদই হলেন সুলতান মুহাম্মদ আল- ফাতিহ। কনস্টান্টিনোপল বিজয়ী। তার হাতেই বিজিত হয়েছে কনস্টান্টিনোপল। তার হাতেই রাসুল সা. এর ভবিষ্যতবাণী প্রতিফলিত হয়েছে।
তদ্রুপ সুলতান প্রথম সেলিমের কাছে অন্দর মহল থেকে খবর আসল যে, সম্রাজ্ঞীর প্রসব বেদনা শুরু হয়ে গেছে। সুলতান কুরআন তেলাওয়াতে বসে পড়লেন। যখন তিনি সুরা আন-নামল এর “ইন্নাহু মিন সুলাইমানা ওয়া ইন্নাহু বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” আয়াত পর্যন্ত পৌঁছলেন, তখন অন্দরমহল থেকে সুসংবাদ আসল যে, আল্লাহ তাকে একটি পুত্রসন্তান দান করেছেন। সুসংবাদটা শুনে তিনি আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করলেন আর নবজাতক পুত্রের নাম রাখলেন ‘সুলাইমান’।
হ্যাঁ, এই সুলাইমানই হলেন সুলতান সুলাইমান কানুনী।সুলাইমান দ্য ম্যাগনিফিসেন্ট।আর তাইতো সুলতান সুলাইমান আল কানুনী কোন চিঠিপত্র লিখতে গেলে এভাবে শুরু করতেন-  “ইন্নাহু মিন সুলাইমানা ওয়া ইন্নাহু বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম…………”
সূত্রঃ أرشيف التاريخ العثماني-Ottoman History Archive